মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১
শিরোনাম

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি


  আরবান ডেস্ক

প্রকাশ :  ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০৬ দুপুর

কানাডায় দীর্ঘ এক দশক পর শেষ হতে যাচ্ছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যুগের। তাঁর দল ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির দলের নতুন নেতা নির্বাচিত করেছে। নতুন নেতা মার্ক কার্নি শিগগির ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হবেন। এর আগে, ট্রুডো গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার মার্ক কার্নি কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি মনোনীত হয়েছেন। গতকাল রোববার লিবারেল পার্টির দলীয় প্রধান নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

কার্নি এমন এক সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যখন কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে এবং দেশটিতে শিগগিরই সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। ৫৯ বছর বয়সী কার্নি ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে পরাজিত করেছেন। এই প্রতিযোগিতায় লিবারেল পার্টির প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার সদস্য ভোট দেন। 

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর এক সমাবেশে ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে কার্নি বলেন, ‘এক ব্যক্তি আমাদের অর্থনীতিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন।’ এর পরপরই সমাবেশ থেকে জোরালো সমর্থন পান তিনি। তিনি বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) কানাডার শ্রমিক, পরিবার ও ব্যবসার ওপর আক্রমণ করছেন। আমরা তাঁকে সফল হতে দিতে পারি না।’

কার্নি বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক নিয়মে চলবে না। আমাদের এমন কিছু করতে হবে যা আগে কল্পনাও করিনি, এমন গতিতে যা আমরা সম্ভব বলে ভাবিনি।’

ট্রুডো জানুয়ারিতে ঘোষণা করেন, তিনি সরে দাঁড়াবেন। সে সময় তাঁর ও দলের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছিল। ফলে লিবারেল পার্টি দ্রুত নতুন নেতা বেছে নিতে বাধ্য হয়। সে সময় ট্রুডো বলেছিলেন, ‘কোনো ভুল করবেন না, এটি একটি জাতিগত মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত। গণতন্ত্র নিশ্চিত কিছু নয়। স্বাধীনতা নিশ্চিত কিছু নয়। এমনকি কানাডার অস্তিত্বও নিশ্চিত কিছু নয়।’

রাজনীতিতে নতুন হলেও কানাডার হবু প্রধানমন্ত্রী কার্নি দাবি করেছেন, দলকে পুনর্জীবিত করা এবং ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার দায়িত্ব পালনের জন্য তিনিই সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি। ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিচ্ছেন, যা কানাডার রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ হতে পারে।

ট্রুডো ট্রাম্পের কানাডার ওপর আরোপিত শুল্কের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ৩০ বিলিয়ন কানাডীয় ডলারের শুল্ক আরোপ করেছেন। এ বিষয়ে কার্নি বলেন, ‘আমার সরকার নিজেদের শুল্ক বজায় রাখবে, যতক্ষণ না আমেরিকানরা আমাদের প্রতি সম্মান দেখায়।’

কার্নির বিজয় প্রথমবারের মতো কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাবিহীন ব্যক্তির কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। তিনি বলেছেন, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা তাঁকে ট্রাম্পের মোকাবিলার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত প্রার্থী করে তুলেছে।

কার্নির নেতৃত্বে লিবারেল পার্টির নতুন সূচনা, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং বারবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ তম অঙ্গরাজ্য বানানোর তার কটাক্ষ—এসব কারণেই লিবারেলদের জনপ্রিয়তা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত