বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১
শিরোনাম

হালুয়াঘাটে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে বিজিবি সদস্যের উপর হামলা


  মো: আব্দুল খালেক

প্রকাশ :  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৩ দুপুর

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের পূর্ব পাবিয়াজুড়ি এলাকায় প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে এক বিজিবি সদস্য ও তার পরিবারের উপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় গুরুতর আহত বিজিবি সদস্যের নাম মিজানুর রহমান (৩২)। সে পূর্ব পাবিয়াজুড়ি গ্রামের মৃত আঃ হালিম খান মাষ্টারের পুত্র। মিজানুর রহমানকে বাঁচাতে এসে তার বড় বোন হালিমা খানম (৩৩) ও খালাত ভাই হেমায়েত (২০) হামলার স্বীকার হন। গুরুতর আহত বিজিবি সদস্য মিজানুর রহমানকে প্রথমে হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় মিজানুর রহমানের মা শিরিনা আক্তার বাদী হলে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫ জনকে আসামী করে হালুয়াঘাট থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৯। মামলার পরই ঘটনায় জড়িত বলাশপুর এলাকার মৃত আব্বাছ আলীর পুত্র শরিফ মিয়া (৪২) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলা সূত্রে ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকদিন আগে মিজানুর রহমান ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী বিকেলে তার বাড়ির পাশে পূর্ব পাবিয়াজুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে ওয়াশ ব্লকের কাজ করছিল শ্রমিকরা। নির্মানাধীর ওয়াশ ব্লকের সাথেই মিজানুর রহমানের ধান ক্ষেত। সেখানে রোপনকৃত ধানগাছ গুলো এ কাজের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ বিষয়টি তিনি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মাষ্টারকে অবহিত করলে তার সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে আব্দুস সাত্তারের নির্দেশে মিজানুর রহমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্রমিকরা দা, লাঠি ও রড নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় মিজানুরের বোন হালিমা খানম ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া হয়। পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। মিজানুরের কলেজ পড়–য়া খালাত ভাই এগিয়ে
আসলে তাকেও আঘাত করা হয়।


এ বিষয়ে স্থানীয় মফিজ উদ্দিন মাষ্টার বলেন, দীর্ঘদিন থেকে জমি নিয়ে সাত্তার মাষ্টারের সাথে মিজানুরের পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব ছিল। তারই প্রেক্ষিতে পরিকল্পিতভাবে সাত্তার মাষ্টার শ্রমিকদের দিয়ে এ হামলা করিয়েছে। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি প্রধান আসামী সাত্তার মাষ্টারসহ সকল আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি। মামলার বাদী শিরিনা আক্তার বলেন, আমার ছেলে চাকুরী থেকে ছুটিতে বাড়ি এসেছে। সে বাড়ি থেকে খুব একটা বের হয় না। আমাদের ফসলি জমি নষ্ট করে বিদ্যালয়ের কাজ করছে। আমার ছেলে শুধু প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানাতে গেলে আব্দুস সাত্তার শ্রমিকদের নিয়ে আমার ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য এ হামলা করে। আমার মেয়ে ও বোনের ছেলে এগিয়ে গেলে তাদেরকেও মারধর করে। আমি ঘটনা শুনে দৌড়ে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় আমার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরি। তার রক্তে আমার কাপড় লাল হয়ে যায়। কিন্তু হামলাকারীরা আমাকেও আঘাত করতে থাকে। আশেপাশের মানুষ এগিয়ে আসলে তারা তখন পালিয়ে যায়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং একজন আসামীকে গ্রেফতার করি। বাকি আসামীদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত