গাজার জন্য ঢাকায় জনসমুদ্র

আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২ দুপুর
_original_1744519310.jpg)
দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এবং ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। যা ছিল স্মরণকালের ইতিহাসে ঢাকার সবচেয়ে বড় গণজমায়েত। চৈত্রের দুপুরে তপ্ত রোদ ও তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে এদিন ঢাকার রাজপথ ছিল লোকে লোকারণ্য। ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে দাঁড়ান দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে লাখো মানুষ নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
গাজায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট’ বাংলাদেশের আয়োজনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার এ কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের ঢল নামে। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। অধিকাংশ এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রাজধানীর বাংলামোটর, কাকরাইল মোড়, জিরো পয়েন্ট, বকশিবাজার মোড় ও নীলক্ষেত মোড় থেকে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসা মানুষের ঢল উদ্যান ছাপিয়ে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, রমনা পার্ক, দোয়েল চত্বর, গুলিস্তানসহ আশপাশের পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকায় তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিল না। সেই সঙ্গে বাস কিংবা মিনি ট্রাকের পাশাপাশি মেট্রোরেলেও ভিড় বাড়ে। কর্মসূচিতে আসা অনেকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো; গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’ এমন লেখা দেখা গেছে। আবার ফিলিস্তিনে জনতা ও নিরীহ শিশু হত্যার প্রতিবাদে প্রতীকি লাশ ও কফিন নিয়েও মিছিল করতে দেখা যায় অনেককে। এ ছাড়াও রাজপথেই অনেককে জোহরের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
এই কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ বিভিন্ন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনীতিবিদ, সামাজিক, ইসলামিক বক্তা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শীর্ষ ব্যক্তিরা অংশ নেন। সবার কণ্ঠে একই সুর, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ। জায়নবাদী ইসরাইল, নিপাত যাক-নিপাত যাক। ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’। এ যেন লাখো মানুষের হৃদয়ে জেগে ওঠে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও একাত্মতার অনন্য বার্তা।
সমাবেশে অতিথিদের মঞ্চে আহ্বান জানানো হলেও তারা কোনো বক্তব্য দেননি। ‘মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ঘোষণাপত্রে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, তারা যেন ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন, গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করা এবং অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি ইসরাইলি পণ্য বর্জনের আহ্বানও জানানো হয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় কর্মসূচিতে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাতে মুসলমানদের রক্ষা ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চেয়ে অনেক মানুষকে কাঁদতে দেখা গেছে।
বেলা সোয়া ৩টার দিকে ক্বারী আহমদ বিন ইউসুফের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এই কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। এর আগে শনিবার ভোর থেকেই রাজধানীর শনিরআখড়া-যাত্রবাড়ী রুট, টঙ্গী, উত্তরা, মহাখালী, সদরঘাট, নয়াবাজার, কেরানীগঞ্জ, গাবতলী, শ্যামলী দিয়ে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে এবং মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় আসতে শুরু করেন লাখো মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে বাস, ট্রেন, লঞ্চ, মেট্রোরেলে এমনকি পায়ে হেঁটে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী শাহবাগের উদ্দেশ্যে আসতে থাকে। ফলে কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাস কিংবা মিনি ট্রাকের পাশাপাশি মেট্রোরেলেও ভিড় বাড়ে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে শাহবাগমুখী যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। এ ছাড়াও গুলিস্থান, বাংলামোটর, শাহবাগ, শ্যামলী শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও মোড় যেতে বেতার ভবন থেকে যানজট দেখা যায়। আগারগাঁও মোড় পর্যন্ত যেতে অন্তত আধঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়েছে সাধারণ বাস যাত্রীদের। মিরপুর থেকে বিজয় সরণিমুখী বাস, মিনি ট্রাকগুলোর মিছিল থামানোর সুযোগ না হওয়ায় আশপাশের সড়কগুলোতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি হয়।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের অপারেটর মাসুদুর রহমান বলেন, অনেকেই ঝামেলা এড়াতে গাড়ি বের করেননি। আবার অনুষ্ঠানের জন্য রাজধানীর কোনো কোনো সড়ক সচল রাখতে ডাইভারশন করা হয়। যেমন আমরা কাঁটাবন, সায়েন্স ল্যাবরেটরিসহ আশপাশের সড়কগুলোতে ডাইভারশন করে দিয়ে ঘুরে যেতে বলেছি। জ্যামে না পড়ে বিপরীতমুখে ফাঁকা রাস্তাগুলো দিয়ে একটু ঘুরে গেলে মানুষ সহজেই যাতায়াত করেছেন।
জোহরের নামাজের পরই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত পয়েন্টে জমা হয় মুসল্লিরা। এরপর সেখানে থেকে দুপুর ২টায় মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা হন তারা। দুপুর আড়াইটা নাগাদ উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেট ও টিএসসি গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ করে হাজার হাজার মানুষ। মিছিলের সম্মুখে কাপড়ে মোড়ানো কয়েকটি লাশের প্রতিকৃতি নিয়ে তারা সোহরাওয়ার্দীর অভিমুখে যেতে দেখা গেছে। সে সময় তাদের ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন; ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইসরাইলের পণ্য, বয়কট বয়কট; ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’; ট্রাম্পের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে; ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ইসরাইলের আস্তানা; নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবরসহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে সোহরাওয়ার্দীদের দিকে জমায়েত হতে থাকে।
এক পর্যায়ে জনারণ্য হয়ে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের পুরো এলাকা। বিশেষ করে জাতীয় প্রেস ক্লাব, মৎস্যভবন, হাইকোর্ট এলাকা, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, রমনা পার্ক, দোয়েল চত্বর, গুলিস্তানসহ আশপাশের পুরো এলাকা পরিণত হয় মানুষের ঢলে এক অনন্য ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে। এ সময় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পোস্টারে জুতা নিক্ষেপ করতে দেখা যায় অনেককে।
রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পানির ট্যাংক দেখা গেছে। মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লোকজনদের পানি খাওয়ানো হচ্ছে। বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টগুলোতে কোনো পুলিশ দেখা যায়নি। তবে লোকে লোকারণ্য হওয়ায় ট্রাফিক ব্যবস্থা অকেজো হয়ে গেছে বলে জানায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে আশপাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোনো যানবাহন চলাচল করেনি।
সরেজমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট মোড়, আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড, বুয়েট এলাকা, চানখাঁরপুল, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররমের চারপাশ, জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন এলাকা, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার মোড়, বাংলামোটর, সায়েন্স ল্যাব, কাঁটাবন মোড় এলাকায় মানুষের ভিড় দেখা যায়। এসব এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
বেলা সোয়া ৩টার দিকে ‘মার্চ ফর গাজা’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জনতাকে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ এবং ইসলামিক বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। এ সময় আজহারীর তোলা স্লোগানে গর্জে ওঠে জনসমুদ্র, উড়তে থাকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনের পতাকা।
ফিলিস্তিনের ভাইদের প্রতি সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ভৌগোলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি, কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা গাজা, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা আল কুদস।
আজকের এই জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন আজহারী। তিনি বলেন, আজকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, এই গণজমায়েতে, এই জনতার গণসমুদ্রে উপস্থিত হয়ে আমরা বুঝতে পেরেছি, আজকের এই মহাসমুদ্র, জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
গণজমায়েতে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের সব দল, মত, চিন্তা-দর্শনের মানুষ মজলুম ফিলিস্তিন ও মজলুম গাজার পাশে আছে, সহাবস্থান করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা, মতগত পার্থক্য, ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ভূমির অধিকারের দাবিতে আমরা প্রত্যেকটা বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।
গণজমায়েতে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা-মত পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিন সেখানকার মানুষের অধিকার। গাজার মানুষের ওপর জুলুম বন্ধের দাবিতে আমরা প্রত্যেক বাংলাদেশি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।
সমাবেশে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণাপত্রে গাজায় আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নিতে এবং ইসরাইলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ঘোষণাপত্রের প্রথমভাগে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ব্যর্থতার কারণে বিশ্ব মজলুম ফিলিস্তিনিদের পাশে না দাঁড়িয়ে দখলদার ইসরাইলকে রক্ষায় মেতে উঠেছে। তাই জাতিসংঘকে জায়নবাদী ইসরাইলের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করতে হবে। যুদ্ধবিরতি নয় বরং গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ১৯৬৭ সালের পূর্বের ভ‚মি ফিরিয়ে দিতে ইসরাইলকে বাধ্য করতে হবে। পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও আত্মমর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে।
এ সময় মাহমুদুর রহমান বলেন, ভারতে সম্প্রতি ওয়াকফ সম্পত্তি আইন সংশোধনের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্বত্বাধিকার হরণ করা হয়েছে যা মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা।
মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জনতা যারা জুলুমের ইতিহাস জানি, প্রতিবাদের চেতনা ধারণ করি সমবেত হয়েছি গাজার শহিদদের পাশে দাঁড়াতে। আজকের এই সমাবেশ কেবল প্রতিবাদ নয়, এটি ইতিহাসের সামনে দেওয়া আমাদের জবাব, একটি অঙ্গীকার, একটি শপথ।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার কর্মসূচিতে অংশ নেন। পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি জেনারেল রেজাউল করিম ও দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও হেফাজতে ইসলাম, আহলে হাদিস, হাইয়াতুল উলইয়া, বেফাকুল মাদারিস, দারুন্নাজাত মাদরাসা, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন। পরে অনুষ্ঠানের সভাপতি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুল মালেকের মোনাজাতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ করা হয়।
মোনাজাতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের চোখে ছিল অশ্রু। ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা, শিশু ও নারীদের মৃত্যু, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার করুণ বাস্তবতা হৃদয়ে নিয়ে মানুষ প্রার্থনা করেন শান্তির জন্য।
মোনাজাতে বলা হয়, ইসরাইল ফিলিস্তিনে যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা মানবতার ওপর চরম আঘাত। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, যেন তিনি নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষা করেন এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতার আলো দেখান। একই সঙ্গে মোনাজাতে গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলা বন্ধ হওয়া, ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধার ও আহতদের সুস্থতা, শিশু ও নিরীহ নাগরিকদের জীবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ, বিশ্ব নেতাদের বিবেক জাগ্রত হওয়া, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত আগ্রাসনের বিচার চেয়ে দোয়া করা হয়।