দুদক চেয়ারম্যান নিজের সম্পদ বিবরণী দিলেন
আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ দুপুর
গণমাধ্যমের সামনে প্রথমবারের মতো নিজের সম্পদ বিবরণী তুলে ধরে নজির তৈরি করলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। এখন পর্যন্ত নিয়োগ পাওয়া সংস্থাটির সাত চেয়ারম্যানের মধ্যে তিনি প্রথম যিনি নিজের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ্যে আনলেন। রোববার বিকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি নিজের আয়-ব্যয় ও সম্পদের বিবরণী তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমার সম্পদ বিবরণী দুদক সংস্কার কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। অন্য কমিশনাররা তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দিয়ে দেবেন। ১১ ডিসেম্বর দুদকে যোগ দেন মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। ওই দিন সাত কর্মদিবসের মধ্যে নিজের ও বাকি দুই কমিশনারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। দুদকের নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে তাদের আয় ও সম্পদ বিবরণীর তথ্য প্রকাশের আহ্বান জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
নিজের সম্পত্তির ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, বসিলায় সাড়ে ৭০০ স্কয়ার ফিটের দুটি মিলিয়ে ১ হাজার ৫০০ স্কয়ার ফিটের এশটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। সেখানে আরও ৭০০ স্কয়ার ফিট নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। পূর্বাচল আমেরিকান সিটিতে স্ত্রীর সঙ্গে আমার একটি খালি জায়গা আছে ৫ কাঠা। বিসিএস প্রশাসন কমিটির সদস্য ছিলাম। সেখানে ৮ জন সদস্যের জন্য ১০ কাঠা জমি আছে। আমার ভাগে ১.২৫ কাঠা পড়বে। ২০০৭ সালে টাকা-পয়সা পেয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত দখল পাইনি।
তিনি আরও বলেন, রাজউকের একটি প্লটের জন্য ৭৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত সেটার কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। যেকোনো কারণে হোক সরকার আমাকে দেয়নি। আমি আবার আবেদন করব। এর বাইরে আমার আর কোনো স্থাবর সম্পদ নেই।
অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন আকারের ২৫ সেলফভর্তি বইপত্র। অনেক দামি বইপত্র আছে। আসবাব ইলেকট্রনিক সামগ্রী মিলিয়ে ৫ লাখ টাকার জিনিস আছে। ৫ বছর মেয়াদি ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আছে। আর ৩ মাস অন্তর সঞ্চয়পত্র আছে ২০ লাখ টাকার। আমার জিপিএফের টাকা আমি তুলিনি, ওই খানে ১৭ লাখ টাকা আছে। নিজের আয়ের উৎস সম্পর্কে জানিয়ে তিনি বলেন, আমার চাকরিলব্ধ আয়-উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের বিক্রয়লব্ধ অর্থ। শিক্ষকতা করি, বক্তৃতা করি, লেখালেখি করি। সাড়ে ৫ শতক একটা জমি কিনেছিলাম বেড়িবাঁধের বাইরে, সেটা বিক্রি করে কিছু টাকা পেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আমার চাকরিজীবন অনেক দিনের। ছাত্র অবস্থা থেকেই আয় করা শুরু করি। যখন এই চাকরি থেকে চলে যাব আপনারা হিসাব করবেন, এই সম্পদ কতটা বাড়ল, কতটা কমল। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি যে প্রধানমন্ত্রীও পালিয়েছেন একই সঙ্গে বায়তুল মোকাররমের খতিবও পালিয়েছেন। রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। এই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে, আর সে জনসচেতনতা প্রচার করতে হবে গণমাধ্যমকে।