মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২
শিরোনাম

শেরপুরে বরবটি চাষে বদলে যাচ্ছে গারো পাহাড়ের গল্প


  রফিক মজিদ, শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ :  ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৩ রাত

শেরপুরের গারো পাহাড়ের কৃষকরা চলতি শীতকালীন মৌসুমে সবজি হিসেবে বরবটি চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছে। এতে বদলে যাচ্ছে আদিাবাসীসহ ওই এলাকার কৃষকদের ভাগ্য এবং তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার গল্পও বদলে যাচ্ছে। একসময় গারো পাহাড়ের এসব জমি পতিত পড়ে থাকতো। এখন সেখানে চাষ হচ্ছে সবজি। তবে এর মধ্যে বরবটি চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখা দিয়েছে। 

কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, শেরপুরে  সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকায় তিন উপজেলা শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষকরা চলতি শীতকালীন মৌসুমে সবজি হিসেবে বরবটি চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছে। এতে বদলে যাচ্ছে আদিাবাসীসহ ওই এলাকার কৃষকদের ভাগ্য। অনেকে হয়েছেন স্বাবলম্বী। গারো পাহাড়ের এসব জমি আগে পতিত ছিল। এখন সেখানে চাষ হচ্ছে সবজি। তবে এর মধ্যে বরবটি চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখা দিয়েছে।

বরবটি একটি পুষ্টিকর সবজি, বরবটিতে রয়েছে ভিটামিন এ ও সি বিদ্যমান। এছাড়াও এটি পটাশিয়াম, জিংক ও আয়রনের একটি ভালো উৎস। এছাড়াও বিভিন্ন এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রন করে, মেদ দূর করে, রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় এবং লিভার ভালো রাখে। বরবটি শিমের চারা গজানোর ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফলন আসতে শুরু করে।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সিংগাবরুনা ইউনিয়নের উত্তর সীমান্ত জুড়ে গারো পাহাড়। এসব গারো পাহাড়ে কর্ণজোড়া, মেঘাদল, বাবেলাকোনা, চান্দাপাড়া, হারিয়াকোনা, দিঘলাকোনা, দার্শিকোনা, মালাকোচা, বালিজুরি, খ্রিষ্টানপাড়া, কোচপাড়া, খারামোড়া ও অফিসপাড়াসহ ২০ থেকে ২২টি গ্রামে প্রায় অর্ধ লাখ লোকের বসবাস। এদের মধ্যে আদিবাসীদের সংখ্যাই বেশি। এসব আদিবাসীরা হচ্ছে গারো, কোচ, হাজং, ঢালু, বানাইসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। আগে গারো পাহাড় ছিল পতিত। আদিাবাসীসহ এলাকার কৃষকেরা বছরের বেশিরভাগ সময় ছিল বেকার। অভাব অনটনে দিন কাটাতো তাদের। ক’বছর যাবত পাহাড়ের পতিত জমিতে চাষ করছে বরবটি শিম।

স্থানীয় কৃষকেরা জানায়, মেঘাদল বাজারে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মণ বরবটি বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসেন। এই বাজার থেকে শেরপুর জেলার সবজি চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বরবটি পাঠানো হয়। আর বাজারে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মত বরবটি শিম বিক্রি করেন কৃষকেরা।

শ্রীরবদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মোঃ মাহমুদুল হাসান জানায়, আমাদের শ্রীরবদী উপজেলায়  লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ সেক্টর  জমিতে কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে ৬০ হেক্টর জমিতে বরবটি চাষ করেছে কৃষকেরা। এবছর শীতকালীন আগাম সবজি হিসেবে বরবটি শিম চাষ করে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন জানায়, জেলার সীমান্তবর্তী  তিন উপজেলা রয়েছে শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী উপজেলায় এই বছরের আনুমানিক ৭৫ হেক্টর জমি। শীতকালীন আগাম সবজি হিসেবে বরবটি শিম চাষ করে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের আদিবাসীসহ কৃষকেরা লাভবান হন। এই বর্বটি চাষে কৃষি বিভাগ থেকেও কৃষকদের নানা পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত