শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
শিরোনাম

পূর্বধলায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে স্বামীর বাড়ীতে অনশন


  মো: জায়েজুল ইসলাম

প্রকাশ :  ০১ আগস্ট ২০২৫, ০১:৪১ দুপুর

প্রায় দুই বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল একজন আর একজনকে। উভয় পরিবারের সম্মতি না থাকায় কিছুটা গোপনেই রেজিষ্ট্রিমুলে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর দুজনে ময়মনসিংহ শহরের একটি ভাড়া বাসায় সংসার পাতেন। এরপর বছরখানি যেতে না যেতেই বেজে উঠে ভাঙ্গনের সুর। কনের অভিযোগ এরই মধ্যে তার স্বামী নতুন আর এক জনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে কথা পাকাপাকি করে ফেলে এবং তাদের বিয়ে অস্বীকার করে। পারিবারিকভাবে সমাধান না হওয়ায় বিয়ের পারিবারিক স্বীকৃতির দাবীতে গত বৃহস্পতিবার কনে তার স্বামীর বাড়ীতে চলে আসেন।

ঘটনাটি ঘঠেছে নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ছোছাউড়া গ্রামের আলাল মিয়ার বাড়ীতে। আলাল মিয়ার পুত্র মো: হানিফ মিয়ার সাথেই তাদের বিয়ে হয়েছিল। কনের উপস্থিতিতে হানিফ মিয়ার পিতা-মাতা বসত ঘরে তালা দিয়ে উদাও হয়ে যায়। কনে বারান্দায় বসে অনশন করছে স্বামীর পারিবারিক স্বীকৃতি পেতে।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কনে সুমি আক্তার পশর্^বর্তী গ্রাম ভিতরগাঁওয়ের মো: ফজলুর রহমানের কন্যা।

সুমি আক্তার জানান, কলেজ জীবনের লেখা পড়া করার সময়ই হানিফ মিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে এই সম্পর্ককে চুড়ান্ত রুপ দিতে তারা একে অপরকে বিয়ে করেন। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে ২৫ নং ওয়ার্ডের দিঘারকান্দা এলাকার কাজী মো: নাদিরুজ্জামান আলম গত ২০২৩ সালের ২১জুন তাদের বিয়ের রেজিষ্ট্রি করান। ৩লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্যকরে ২০হাজার টাকা পরিশোধ দেখিয়ে স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিয়ে পড়ান ময়মনসিংহের বাঘমাড়া এলাকার বাসিন্দা মো: নাঈম হাসান। তারপর  হানিফ মিয়ার ফুপাতবোন ময়মনসিংহ বসাবাসকারী রিনা আক্তারের বাসায় তারা ভাড়ায় থাকেন। সেখানে তাদের প্রায় এক বছর সংসার চলে। এরই মধ্যে হানিফ মিয়া তার এক নিকটাত্মীয়ের মেয়ের সাথে নতুন করে প্রেমে জড়ান। এতে তাদের সংসারে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। বিষয়টি পরিবারের লোকজনের মাঝে জানাজানি হলে তাদের আলাপ আলোচনায় কোন সমাধান হয়নি। উল্টো ওই মেয়ের সাথে হানিফের পরিবারে লোকজন তাদের বিয়ের কথা পাকাপাকি করতে থাকে। সুমি বলেন, এই অবস্থায় আমার আর কোন উপায় না থাকায় আমি আমার স্বামীর  স্বীকৃতির দাবীতে বৃহস্পতিবার সকালে শুশুর বাড়ীতে চলে আসি। এখানে তারা আমাকে গ্রহন না করে উল্টো আমাকে মারধর করে আমার গলা চেপে ধরে। আমাকে চলে যেতে বলেন। আমি যাবনা  বললে তারা ঘরে তালা লাগিয়ে চলে যায়। এখানে আমি খুব কষ্টে আছি, নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিদ্যুতের লাইন ঘরের ভিতর থেকে মেইন সুইজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর পরও আমি আমার দাবী আদায় ছাড়া আমার আর কোন পথ নেই।

সুমির সাথে থাকা হানিফের ফুফাত বোন রিনা আক্তার জানান, সুমি প্রায় ৭ বছর ধরে ময়মনসিংহে আমার বাসায় ভাড়া থাকে। এখন সে ময়মনসিংহের একটি বেসরকারী হাসপাতালে সেবিকার চাকুরী করে। প্রায় দুই বছর আগে হানিফের সাথে সুমির বিয়ে হয়। কিন্তু এখন হানিফ সুমির সাথে সংসার করতে চাচ্ছে না। এতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হানিফের সাথে কথা বলতে চাইলে তার একাধিক নাম্বারে কল দিলেও তার নাম্বারগুলি বন্ধ দেখাচ্ছে। 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আজ শুক্রবার সকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুমি এখনো তার স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করছে। এখন তার সাথে আরও বৈরী আচরন করছে। তাদের লোকজন দিয়ে বারান্দায় বসার চেয়ার গুলিও সরিয়ে নিয়েছে।  তবে সুমি জানায়, আগামীকাল শনিবার পরিবারের লোকজন তাদের নিয়ে বসবে বলে জানিয়েছে। 

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ নূরে আলম জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করে নি। তবে দুই পক্ষের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি নিষ্পত্তির প্রত্যাশা করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত