ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখার শাস্তি

আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৩ দুপুর
_original_1741498419.jpg)
রমজান মাসে প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন ও মুকিম তথা নিজ বাড়িতে অবস্থানকারী প্রত্যেক মুসলমানের ওপর রোজা রাখা ফরজ। রোজার বিধান সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ!
তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)। অন্য এক আয়াতে এসেছে, ‘অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা পালন করে। তবে কেউ রোগাক্রান্ত হলে অথবা সফরে থাকলে এ সংখ্যা অন্য সময়ে পূরণ করবে।’ (সুরা বাকারা : ১৮৫)
এই মাসে রোজা রাখলে যেমন অধিক সওয়াব লাভের সুযোগ রয়েছে, তদ্রুপ রোজা না রাখলেও রয়েছে ভয়াবহ শাস্তির আশঙ্কা। রমজান মাসে রোজা পরিত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। রমজান মাসে রোজার প্রতিদান বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই দশগুণ থেকে সাতশগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, কিন্তু রোজা ছাড়া। কেননা তা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সে আমার সন্তুষ্টির জন্য কামাচার ও পানাহার পরিত্যাগ করে। রোজা পালনকারীর জন্য রয়েছে দুটি পুরস্কার যা তাকে খুশি করে। যখন সে ইফতার করে তখন খুশি হয় এবং যখন সে তার রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে তখনও রোজার বিনিময় লাভে আনন্দিত হবে। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন যে, প্রত্যেক আমলেরই কাফফারা আছে। রোজা আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেব। (বুখারি ৭৫৩৮)
রোজার বিনিময়ে রয়েছে জান্নাত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রমজান মাস ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্যের প্রতিদান জান্নাত’ (ইবনে খুযাইমা ১৮৮৭) আরেক হাদিসে এসেছে, ‘রোজা ঢালস্বরূপ যতক্ষণ পর্যন্ত তা ভেঙে না ফেলে’ (নাসাঈ ২২৩৫, মুসনাদে আহমাদ ১৬৯০)। এখানেই শেষ নয়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন যে, ‘রোজা পালনকারীর মুখের (না খাওয়াজনিত) ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মেশকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম’ (বুখারি ১৯০৪, সহিহ মুসলিম ১১৫১)। তিরমিজি শরিফে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (তন্মধ্যে একজন হলো) রোজা পালনকারী ব্যক্তি, যতক্ষণ না ইফতার করে।’ (তিরমিজি ৩৪৯৮)
এত গেল অধিক ফজিলতের বর্ণনা। রমজান মাসে রোজা না রাখার ভয়াবহ শাস্তির ব্যাপরে হাদিসে এসেছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এসময় দুজন ব্যক্তি এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। অতঃপর আমাকে এমন কিছু লোকের কাছে নিয়ে যায়, যাদের পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন, তা হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা এমন রোজাদার, যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ইফতার করত (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস : ১৫০৯)। অপর হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি প্রয়োজন ও রোগ ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভেঙে ফেলল, তার সারাজীবনের রোজা দ্বারাও এ কাজা আদায় হবে না, যদিও সে সারাজীবন রোজা পালন করে’ (তিরমিজি : ৭২৩)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রোজা রাখার তওফিক দান করুন।