জাতীয় কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ
আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ০৬:৩৬ সকাল
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ছিলেন প্রেম, মানবতা ও বিদ্রোহের প্রতীক। ১৮৯৯ ইংরেজি ও ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সাহিত্যের এই বিরল প্রতিভা। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।
জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) থেকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তিনদিনব্যাপী জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে প্রেম, দ্রোহ আর মানবতার কবি নজরুলের জন্মবার্ষিকী উদযাপন শুরু হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে নজরুলের কবিতা ও গান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কবি নজরুল তার প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছেন। নজরুল সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক।
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে যুগে যুগে মানুষকে প্রতিবাদ-প্রতিরোধে উচ্চকণ্ঠ হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তার কাছে ধর্ম, গোত্র, জাত-কুল, ধনী গরিব সব শ্রেণির মানুষ ছিল সমান। তার গানে প্রেম ও প্রকৃতি অপরূপ রূপে ধরা দিয়েছে। তাই কবি নজরুল একাধারে দ্রোহ ও মানবতার কবি। সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতার কবি। সত্য, সুন্দর, কল্যাণ, প্রেম ও হৃদয়াবেগের কবি।
নজরুলকে কেউ বলেন প্রেমের কবি, কেউ বলেন দ্রোহ আর বিদ্রোহের। কারো কাছে মানবতার কবি নজরুল, গান গেয়েছেন সাম্যের। প্রাণের কবি, গানের কবি-এমন নানা নামে ডাকে সাধারণ। গবেষকরা বলছেন, নির্দিষ্ট কোন গণ্ডি নয়, নজরুলের বিস্তৃতি সর্ব পরিসরে।
১৯২২ সালে প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা। ’আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার জন্য নজরুলকে দেয়া হয় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। মাত্র ২২ বছর ব্যাপ্তির লেখক জীবনে রচনা প্রায় ৪ হাজার গান, অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প আর উপন্যাস। সাহিত্যের পাশাপাশি করেছেন সংগীত ও চলচ্চিত্র পরিচালন, এমন কী অভিনয়ও। বর্ণাঢ্য জীবনে জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও।
স্বাধীনতার পরের বছর কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। দেওয়া হয় জাতীয় কবির সম্মান। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন প্রিয় কবি। কবির ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।