পূর্বধলায় এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছেন আলিউল বারী জয়

মো: জায়েজুল ইসলাম
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৪০ দুপুর
_original_1752579128.jpg)
নেত্রকোনার পূর্বধলায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছেন আলিউল বারী জয়। সে পূর্বধলা জগৎমনি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১২৪৮ নাম্বার পেয়ে সর্বোচ্চ স্থান দখল করেছে।
আলিউল ছোটবেলা থেকেই ছিল মেধাবী। প্রাথমিক স্তরে কিন্ডারগার্টেনে না পড়ে সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ে লেখা পড়া করেই নিজের ভিত তৈরী করেছেন। সে উপজেলা সদরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে প্রথমিক সমাপনি পরীক্ষায় ৬০০ নাম্বারের মাঝে ৫৬৯ নম্বর পেয়ে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে ছিল।
পরে পূর্বধলা জগৎমনি সরকারি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ট শ্রেণিতে ভর্তি হয়। তাদের সময়ে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষার প্রচলন না থাকায় সেখানে যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ থেকে যেমন বঞ্চিত হয়েছেন তেমনি মেধাবীরা বৃত্তির টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ২০২৫ এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে তিনি গোল্ডেন এ প্লাসসহ জিপিএ ৫ পেয়েছেন। সে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৪ বিষয়ে ১৩০০ নম্বর থেকে ১২৪৮ নাম্বার পেয়ে উপজেলায় শীর্ষ স্থান অর্জন করেছেন। সম্ভবত এই নাম্বারটাই জেলার সর্বোচ্চ নাম্বার। নম্বরপত্রে দেখা গেছে বাংলা প্রথম ও ২য় পত্রে ১৮১, ইংরেজী ১ম ও ২য় পত্রে ১৮৯, গণিতে ৯৯, বাংলাদেশ ও বিশ^ পরিচয়ে ৯১, ধর্মে ৯৩, পদার্থ-১০০, রসায়ন-৯৯, উচ্চতর গণিতে ৯৯, আইসিটিতে-৪৯. জীব বিজ্ঞানে ৯৮ নাম্বার পেয়েছে। এছাড়া শারিরিক শিক্ষা ও ক্যারিয়ার এডুকেশনে ১০০ ও ৫০ নাম্বার পেয়েছে। তার এমন ফলাফলে উচ্ছ্বসিত তার পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ তার সহপাটিরা।
আলিউল বারী জয় তার ফলাফলে সন্তোষ্টি প্রকাশ করে বলেন, তার এমন সাফল্যে তার পিতা-মাতা, শিক্ষকদের অবদানের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার এইচ.এস.সিতে ভর্তির জন্য পচন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন সরকারি কলেজ। জয় ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক হতে চায়। সে আরো জনায়, একটি ভালো রেজাল্টের জন্য দিনে প্রায় ১৮ ঘন্টাই তিনি পড়ার টেবিলে কাটিয়েছেন। তার কোন ফেসবুক আইডি নেই এবং এ পর্যন্ত কোন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে নাই। তার উত্তর সুরিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভাল ফলাফলের জন্য কঠোর অধ্যবসায়ের কোন বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের স্মার্ট ফোন প্রীতি কমাতে হবে। তিনি ভবিষ্যত সাফল্য অব্যাহত রাখার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) নুরে আলম সিদ্দিকী মামুন জানান, জয় বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী, নম্র এবং ভদ্র স্বভাবের শিক্ষার্থী ছিল। উপজেলায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এমন ভাল ফলাফল করায় আমার গর্বিত।
আলিউল বারি জয়, মোঃ আব্দুল হামিদ ও সাদিয়া আক্তার মিলা দম্পতির দুই পুত্রের মাঝে সে বড় সন্তান। তার পিতা আব্দুল হামিদ একজন সফল প্রাথমিক চিকিৎসক হিসেবে উপজেলা সদরের খাদ্য গোদাম রোডে নিজ বাসার সাথেই চেম্বারে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র জীবনে তিনি নিজেও একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি এসএসসি পরীক্ষায় ১৯৯৩ সালে ৮২৯ নম্বর পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে উপজেলায় প্রথম ও জেলায় ২য় হয়েছিলেন। পরে আনন্দ মোহন সরকারী কলেজ থেকে ৭৭৭ নাম্বার পেয়ে কৃতিত্তের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে পারিবারিক সমস্যার কারনে লেখা পড়া শেষ করতে পারেননি। সন্তানের ভালো ফলাফলের জন্য সন্তোষ্টি প্রকাশ করে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। আলিউল বারী জয়ের মা একজন গৃহীনি। তাদের গ্রামের বাড়ী উপজেলা সদর ইউনিয়নের খারছাইল গ্রামে।