গণমাধ্যমে বৈচিত্র্য,লিঙ্গসমতা ও প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ বিষয়ক কর্মশালা
মো: আরিফুল ইসলাম
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৭ বিকাল
_original_1766577981.jpg)
নেত্রকোণায় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে এবং এতে পরিবেশিত সংবাদে নায্যতার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও সকল লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষের সমান অধিকার, সুযোগ, উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে একটি বাস্তবভিত্তিক নির্দেশিকা প্রয়োজন।
সেই ধারাবাহিকতায়, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ভয়েস’ “গণমাধ্যমে বৈচিত্র্য, লিঙ্গসমতা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণে নীতিমালা প্রণয়ন বিষয়ক সক্ষমতা উন্নয়ন” বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করেছে স্বাবলম্বী উন্নয়ন সংস্থার ড্রিম সেন্টারে।
কর্মশালায় অংশ নেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক, প্রতিবেদক, বার্তা সম্পাদনায় যুক্ত কর্মী, মানবসম্পদ বিভাগের প্রতিনিধি ও সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যরা।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা প্রতিবন্ধিতা, লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা, গণমাধ্যমে তাদের অংশগ্রহণে বাধা ও অতিক্রমের উপায়সহ, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এছাড়া, গণমাধ্যমে লিঙ্গ বৈচিত্র্য ও প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক নীতিমালাতে কোন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হবে এবং নীতিমালা প্রণয়নের, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বিগত সময়গুলোতে দেখেছি সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষেরা গণমাধ্যমে কাজ করার সুযোগ পাননা। একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলে সংবাদ উপস্থাপনা,নিয়োগ, কর্মপরিবেশ এবং সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তি যথাযথভাবে প্রতিফলিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ছাত্ররা সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করছে, তাদেরকে এখন থেকেই এই ধরণের সচেতনতামূলক কাজে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন ভয়েস এর প্রোগ্রাম অফিসার প্রিয়তা ত্রিপুরা। তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও লিঙ্গবৈচিত্র্য সম্পন্ন মানুষদের এখনো নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়। গণমাধ্যমে যদি তাদের ইতিবাচক গল্পগুলো প্রচারিত হয় তাহলে সমাজের প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো দূর হবে। এজন্যে গণমাধ্যমকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ন।’
প্রশিক্ষণ সহায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার পাল। তিনি বলেন, “গণমাধ্যম সমাজের দর্পন। পলিসিতে নারী কর্মীদের জন্যে যাতায়াত, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ সুবিধা, ব্রেস্টফিডিং কর্ণার, ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কর্মক্ষেত্রে শক্তিশালী সংবেদনশীলতা নিশ্চিত হবে। ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় জেন্ডার সংবেদনশীলতা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত জরুরি।’
এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা, গণমাধ্যমে লিঙ্গবৈচিত্র্য ও প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক নীতিমালা যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া সংবাদমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও সব লিঙ্গ পরিচয়ের মানুষের ন্যায্য উপস্থাপনা ও তাঁদের প্রতিনিধিত্ব, প্রবেশগম্য সংবাদ প্ল্যাটফর্ম, নিয়োগ, মানবসম্পদ ও কর্মপরিবেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি, ভাষা ব্যবহারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা, তদন্তধর্মী ও বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনের প্রসার, ডিজিটাল নিরাপত্তা, অভিযোগ প্রতিকার এবং মানবাধিকারভিত্তিক গল্প বলার কাঠামো, এসব বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়।
ইউনেস্কোর সহায়তায় ভয়েস ‘লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমে বৈচিত্র্য’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধীতা ও লিঙ্গসমতা বিষয়ক একটি ব্যবহারিক নির্দেশিকা তৈরি করা যা গণমাধ্যমকর্মীদের দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।
কর্মশালায় যমুনা টিভি, দৈনিক বাংলার নেত্র, বাংলাভিশন, দৈনিক বাংলার দর্পণ, দৈনিক নেত্র, প্রথম আলো, দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন, নাগরিক টিভি, একুশে টিভি এবং আজকের পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধিগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।




_medium_1766563316.jpg)
_medium_1766559859.jpg)

