সঞ্চয় সূত্র
সুহাদা মেহজাবিন
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫১ বিকাল
জমা খরচের সাধারণ হিসাব হচ্ছে আয়ের অন্তত চার ভাগের এক ভাগ সঞ্চয় করা। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বাজারে সংসারী মানুষের জন্য ব্যাপারটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। নিয়মিত সঞ্চয়ের অভ্যাস করতে পারলে বিন্দু বিন্দু করেই সিন্ধু গড়ে উঠবে।
কী করবেন
# সঞ্চয়ের জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে সদিচ্ছা। আপনি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা যে কোনো স্বাধীন পেশায় থাকুন না কেন জীবনের জন্য সঞ্চয়ের বিকল্প নেই। সঞ্চয় শুরু করুন আজ থেকেই। আগামী মাসের আশায় থাকলে সেই মাস আর আসবে না। প্রতি মাসেই কোনো অজুহাতে ফসকে যাবে।
# চাকরিজীবীরা বেতনের চার ভাগের একভাগ বাদ দিন শুরুতেই। তারপর বাকি টাকায় মাস চলার জন্য খরচ ভাগ করে তালিকা করে নিন। ব্যবসায়ীরা মাসের শুরুর দিকেই নির্দিষ্ট অংকের টাকা আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ডে জমা করে দিন। মাস শেষের আশায় থাকবেন না। সাধারণত নানা ধরনের বাড়তি খরচের চক্করে মাসের শেষে হাতে জমা করার মতো টাকা থাকে না।
# আয়ের জন্য বাজেট খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি মাসের বাজেট তৈরি করুন। এক মাসের ব্যক্তিগত ও সাংসারিক প্রয়োজনের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করুন। এ ক্ষেত্রে কোনো খরচই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না, তা সে যত ছোটই হোক। মাসের প্রথম দিন থেকে এ বাজেট অনুসরণ করুন। একইভাবে দৈনিক একটা বাজেট থাকবে। খুব বিপদ না হলে বাজেটের বাইরে খরচ করবেন না।
# বিশেষ প্রয়োজনে জরুরি সময়ের জন্য প্রতি মাসে অল্পকিছু করে টাকা আলাদা করুন। এই টাকা ব্যাংকে রাখা টাকার বাইরে রাখুন। খুব জরুরি প্রয়োজনেই শুধু এই টাকা খরচ করুন। এতে ব্যাংকে রাখা টাকায় হাত দিতে হবে না।
# সপ্তাহে এক দিন বা মাসে দুই দিন কোনো ধরনের খরচ না করে পার করুন। এই দিন কোথাও বের হবেন না। বাজার করবেন না। ঘরে যা আছে তাই দিয়েই দিন পার করুন। এই দিনের হাত খরচের জন্য রাখা টাকাগুলো খুচরো হিসেবে আলাদা করে জমান। বেশ কিছুদিন জমালে নিজের শখের একটা পোশাক, জুতা বা ধারেকাছে ট্যুরের টাকা পেয়ে যাবেন।
# এক বছর বা দুই বছর এ রকম স্বল্পকালীন সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করুন। স্বল্পকালীন এ সঞ্চয় আপনাকে এককালীন বেশ ভালো পরিমাণ টাকা দেবে। সেই টাকা একসঙ্গে করে দীর্ঘমেয়াদে সঞ্চয়ের চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু স্বল্পকালীন সঞ্চয় বন্ধ করবেন না।
যা করবেন না
# কেনাকাটা বা বাজারে যাওয়ার আগে লিস্ট করে যাবেন। লিস্টের বাইরে কিছুই কিনবেন না। যত অফারই থাকুক আপাতত প্রয়োজনীয়র নয় এমন কিছু মূল্যছাড় পেলেও বাদ দিন।
# জীবন-মরণের ব্যাপার ছাড়া ঋণ করা থেকে বিরত থাকুন। ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডও ব্যবহার না করাই ভালো। কার্ডে কেনাকাটা না করে ক্যাশ টাকায় করুন। অহেতুক খরচ কম হবে।
# বাইরের খাবারে বাড়তি খরচ বেশি হয়। বিশেষ উপলক্ষ ছাড়া বাইরে খাওয়া বাদ দিন। কর্মস্থলে দুপুরের খাবার কিনে না খেয়ে বাসা থেকে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য আর মানিব্যাগ দুটোই ভালো থাকবে।