পূর্বধলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলা, অভিযোগ প্রত্যাহারে হুমকি

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের লাউজানা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নূরুল ইসলামের স্ত্রী হাজেরা বেগমকে মারধর করেন একই গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আজহারুল ইসলাম গংরা। পরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে পূর্বধলা থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন হাজেরা বেগমের স্বামী নূরুল ইসলাম। অভিযোগে গৃহবধূকে মারধর ও শ্লীলতাহানির বিষয়টিও উঠে এসেছে।

গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার লাউজানা গ্রামে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। এদিকে, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর নূরুল ইসলামের ওপর ক্ষেপছেন আজহারুল ইসলামসহ তার লোকজন। এসব অভিযোগ তুলে নিতে এবং হাসপাতাল থেকে বের করে করে দিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানান হুমকি দিচ্ছেন আজহারুল ইসলামসহ তার লোকজন। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নূরুল ইসলাম।

নূরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে কয়েক দফা শালিস হয়। সর্বশেষ গত মাসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বসে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। কিন্তু আজহারুল ইসলামসহ তার লোকজন বিচার সালিশ না মেনে চলে যায়। 

তিনি আরও জানান, এই ক্ষোভের কারণে গত ১১ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে আমার বাড়ির পুকুর পাড়ে কাজ করার সময় আইয়ুব আলী, তার ছেলে আজহারুল ইসলাম, জুবায়েদ, আঃ গনি (রুবেল) ও অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে নিয়ে তার ওই জমি দখল করতে যান। তিনি তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে তিনি বাঁধা দিলে আজহারুল ইসলামসহ তার লোকজন হাজেরা বেগমের পরনের কাপড়-চোপড় টেনে হিচড়ে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি করে। এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে নূরুল ইসলাম ও  তার স্ত্রী হাজেরা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর রক্ষাক্ত জখম করে। হাজেরা বেগমের বাম কান থেকে কান ছিঁড়ে দুই আনা ওজনের স্বর্ণের দুল ও আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিলে তা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন আজহারুল ইসলামসহ তার লোকজন। এমনকি হাসপাতাল থেকে বের করে দিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের কথা জানান নূরুল ইসলাম। গ্রামের লোকজনও তার পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার চান তিনি।

তবে নূরুল ইসলামের স্ত্রী ও নূরুল ইসলামকে মারধর ও হুমকির বিষয়ে আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা তাকে একটুও তাকে চাপ প্রয়োগ করিনি। কথা কাটাকাটি ঠেলা ধাক্কা হয়েছে ঠিক আছে, সেটাও তার অপরাধের কারণে। জমি আমাদের কাগজপত্রও আমাদের নামে। মামলা মোকদ্দমা হয়েছে কিনা খোঁজখবর নিতে আমার বোন জামাই এসেছে এবং দুই পক্ষের লোকজনকে শান্ত থাকতে বলছেন। প্রয়োজনে গ্রামের লোকজন নিয়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হবে। তার এর সাথে লোকজন এসেছিল।

এ বিষয়ে পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি পাশাপাশি অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।