ঢাকা, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
শিরোনাম

পূর্বধলায় রাজধলা বিলে শুধুমাত্র নিবন্ধিত মৎস্যজীবিদের মাছ ধরা উন্মুক্ত’


  মো: জায়েজুল ইসলাম

প্রকাশ :  ০৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৬ রাত

নেত্রকোণার পূর্বধলায় শুধুমাত্র নিবন্ধিত মৎস্যজীবিদের রাজধলা বিলে মাছ ধরা উন্মুক্ত ঘোষনা করে নতুন নির্দেশনা আরোপ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেনের উপস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসন এ নির্দেশনা আরোপ করেন। নতুন বিধি নিষেধ অনুযায়ী জানানো হয় শুধুমাত্র রাজধলা বিলের আশে পাশের নিবন্ধনকৃত জেলে পরিবারের জন্য বিলটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে মাছ ধরা সম্পুর্ণ নিষেধ বলে ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়া ২৩ সে: মি: নীচে মাছ ধরাও যাবেনা বলে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ১৩০ একর জায়গা নিয়ে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রাজধলা বিলটি জেলা প্রশাসন থেকে ৬ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। উপজেলার বালিয় মৎস্যজীবি সমিতি নামে একটি মৎস্যজীবি সংগঠন সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা পায়। প্রথম বছরে ইজারামুল্য নির্ধারন করা হয়েছে ভ্যাট ব্যতীত ৮লক্ষ ৮৩হাজার ২৬ টাকা। নতুন মৎস্যজীবি সংগঠন ইজারা পাওয়ার পর বিলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির পোনা মাছ ছাড়ে এবং বিলে মাছ ধরা নিয়ে সবার জন্য বিধি নিষেধ আরোপ করে।

এতে বিল পাড়ের মৎস্যজীবি পরিবারগুলো বিলে মাছ ধরতে না পারায় বেকায়দায় পড়ে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেনকে জানানো হলে তিনি বিলটি মাছ ধরার জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। বিল উন্মুক্তের বিষয়টি সংসদ সদস্যের নির্দেশে গত বুধবার মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়। খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়। মাইকিং এর পরপরই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে প্রচুর পরিমানে বড়শী শিকারী মাছ ধরতে বিলপাড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তারা ছোট বড় সকল প্রজাতির দেশীয় মাছ অবাধে শিকার করতে থাকে।

এতে ইজারাদার মৎস্যজীবি দলটি ক্ষতির মাঝে পড়ে। ইজারাদার প্রতিনিধি মো: সিরাজুল ইসলাম জানান মাইকিং এর পরে তিন দিনে উপজেলার আশ পাশসহ দুরদুরান্ত থেকে দলে দলে বড়শী শিকারী এখানে মাছ শিকার করতে এসে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। এতে আমরা ইজারাদার হিসেবে ক্ষতির সম্মুখীন হই। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে তাই বিষয়টি সংসদ সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি। তারই প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন সরেজমিনে বিলপাড় পরিদর্শন করেন এব বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রচুর বড়শী শিকারী দেখতে পান। এ সময় তিনি বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে তাদের পরিচয় জানেন। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার বিকেলে উপজেলার প্রায় ৫০টির মতো সৎস্যজীবি দল, সাধারন মানুষ ও ইজারাদার পক্ষের লোকজনদের নিয়ে পূর্বধলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন। এ সময় তিনি সকল পক্ষের বক্তব্য শোনেন।

শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. খবিরুল আহসান জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জলমহাল হিসেবে রাজধলা বিলটি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী ইজারাদার বিলের মাছ রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখেন। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকলে ইজারাদার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিল পাড়ে মৎস্যজীবিদের সাথে সমন্বয়ে তারা মাছ চাষ করছে এবং ২পক্ষই উপকৃত হচ্ছে মর্মে জানা যায়।

তবে কারেন্ট জাল, অবৈধ চায়না দুয়ারী বাইড় দিয়ে মাছ ধরা সম্পুর্ণ নিষেধ। তাছাড়া ২৩ সে:মি: নীচে রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউস, গণিয়া ইত্যাদি মাছ ধরা যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত