এবার ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে চাপে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট
আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৭ দুপুর
দুর্নীতি বন্ধে সার্বিয়ায় হাজারও শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নোভি সাদের রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় শুরু হওয়া এ ছাত্র আন্দোলন আরও বড় আকার ধারণ করেছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, সরকারের অদক্ষতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভের মুখে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে সার্বিয়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিলোশ ভুচেভিচ পদত্যাগ করলেও আন্দোলন থামেনি।
গত নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের এ অবস্থান-বিক্ষোভের চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিলোশ ভুচেভিচসহ উচ্চপদস্থ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ।
আন্দোলন দ্রুত সার্বিয়ার বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাজধানী বেলগ্রেডে। শিক্ষার্থীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করেছে। শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভে শহরের বাসিন্দাদের সঙ্গে ট্রাক্টর নিয়ে কৃষকেরাও যুক্ত হন। গত সপ্তাহে এই বিক্ষোভ এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে এটি সার্বিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত হয়। আন্দোলন এখন শতাধিক শহর ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, যারা এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। তারা শুধু দুর্ঘটনা নয়, সার্বিয়া সরকারে সর্বস্তরে দুর্নীতি ও অদক্ষতা বন্ধ চাচ্ছে।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী দেজান বাগারিক বলেন, সার্বিয়ার ইতিহাসে এমন গণবিক্ষোভ আগে কখনো দেখা যায়নি। মানুষ সত্যিই সরকারের দুর্নীতিতে ক্লান্ত। এই সরকার ভয়াবহ মাত্রায় দুর্নীতিগ্রস্ত।
গত শনিবার বিক্ষোভকারীরা সমাবেশের জন্য শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হলে সেখানে থাকা দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী জেলেনা ভুকসানোভিচ বলেন, ‘ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। আমরা ভীত নই। আমরা ছেড়ে দেব না।’
এদিকে আন্দোলনকে বিদেশি শক্তির প্রভাবে চালানো হচ্ছে বলে দাবি করছে সার্বিয়ার সরকার। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তাদের আন্দোলন একেবারেই দেশীয় এবং তারা সার্বিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়।
উল্লেখ্য, দেশটিতে ক্রমেই বাড়তে থাকা বেকারত্বের হার এই বিক্ষোভকে আরও তীব্র করে তুলছে। তরুণরা কাজের খোঁজে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, ফলে সরকারের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বাড়ছে।
এর আগে, গত বছর নির্বাচন জালিয়াতির অভিযোগে বিরোধী দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল। তবে এবারের বিক্ষোভে সাধারণ জনগণ ও ছাত্রসমাজও যুক্ত হয়েছে, যা সরকারের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।