ঢাকা, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

স্বতন্ত্র সাংসদরা বর্তমান রাজনীতির জন্য নতুন বার্তা

  নিউজ ডেস্ক

প্রকাশ :  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:২৪ দুপুর

সৈয়দ আরিফুজ্জামান : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়েও ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী তুমুল প্রতিদ্বন্দিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আরও শ'খানেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ভালো ভোট পেয়ে পরাজিত হলেও ৭ জানুয়ারি ফলাফল ঘোষনা পর্যন্ত দলের মনোনীত প্রার্থী অনেককেই দুঃশ্চিন্তায় প্রহর গুনতে হয়েছে। নির্বাচনের এই ফলাফল স্থানীয় নেতৃত্বের জন্য অনাগত দিনগুলির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ আর দলীয় হাই কমান্ডকে ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার মত ঘটনা।

যারা দীর্ঘ সময় ধরে সরকার ও দলীয় সুযোগ-সুবিধা ও পদ-পদবী পেয়েও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করেননি আর নাগরিক সেবা প্রদানে থেকেছেন উদাসীন তাদের প্রায় সকলেরই এই নির্বাচনে ভরাডুবী হয়েছে। তাদের মধ্যে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতা পর্যন্ত রয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এমন অভাবনীয় সাফল্য আগামী পাঁচ বছর নির্বাচিত সকল সংসদ সদস্যদের জনগনের কাছে জবাবদিহিতার মুখেমুখি করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে সরকারের এবারের কৌশল ছিল দলীয় মনোনয়ন দিলেও দলের সবার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ উন্মুক্ত করে দেয়া। বিএনপি'র মত বড় একটি দল নির্বাচন বয়কট করার পর আওয়ামীলীগ ও সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার কাছে এটিই ছিল অন্যতম বিকল্প।

শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা কেবলমাত্র এই নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতেই সহায়তা করেনি, বোনাস হিসেবে পরবর্তীতে দল গুছিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে স্পষ্ট বার্তাও তিনি পেলেন। আর দল থেকে যারা এবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তারাও আগামী পথ চলার ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনা ও হুশিয়ারী বার্তা পেলেন।

এবারের নির্বাচনের আর একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল, ছোট ছোট দলগুলো ভোটের রাজনীতিতে কতটুকু গুরুত্ব বহন করে তাও স্পষ্ট হয়েছে। জাতীয়পার্টিসহ অন্যান্য ছোট দল থেকে নির্বাচিতরা হয়তো গুরুত্ব হারাবেন স্বতন্ত্র সাংসদদের সংখ্যাধিক্যের কারণে। ছোট দল গুলোর দর কষাকষির সুযোগ কমিয়ে দিতে পারে পরবর্তী রাজনৈতিক ময়দানে।

সবদিক বিবেচনায় নিয়েই হয়তো প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ জানুয়ারি গণভবনে আপ্যায়িত করলেন নির্বাচিত সকল স্বতন্ত্র সাংসদদের। নিঃসন্দেহে এতে তাদের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ স্বতন্ত্র সাংসদদের সম্মানিত করার পাশাপাশি দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত সাংসদদের জন্যও বিশেষ বার্তা, যা আগামী দিনগুলোতে দলীয় সাংসদদের জন্য সর্বক্ষণ একটা চাপ হিসেবে কাজ করেবে।

স্বতন্ত্র সাংসদদের দলীয় রাজনীতি আর সরকারে সক্রিয় থাকতে চাওয়ার বেশ আগ্রহ থাকলেও প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র ভাবেই জোড়ালো ভুমিকা রাখার প্রতি নির্দেশনা দিলেন। সংসদকে কার্যকর রাখার ক্ষেত্রে এটা সহায়ক হতে পারে। পাশাপাশি দলের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে সঠিক নেতৃত্ব বাছাই সহজ হবে।

নির্বাচন ঘিরে সকল জল্পনার অবসান করে দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবার সরকার পরিচালনা আওয়ামীলীগের এক বড় সাফল্য। এখন কেবলই অপেক্ষার পালা, নতুন সরকারের আগামীর পথচলা আর সঠিক নেতৃত্ব ঠিক করে দলকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কতটুকু প্রস্তুত করা সম্ভব হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত