ঢাকা, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১
শিরোনাম

পূর্বধলায় নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ শিকার করছে প্রভাবশালীরা 


  মোস্তাক আহমেদ খান

প্রকাশ :  ১১ জুন ২০২৪, ০৯:২৭ সকাল

নেত্রকোনার পূর্বধলায় সদ্য খনন কৃত লাউয়ারী নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে পানির প্রবাহ আটকে দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর বাজারের পশ্চিম পাশে কৃষ্টপুর গ্রামের মৃত আকবর আলির ছেলে সেকান্দার আলী ও তার ছেলেরা এবং উপজেলার ৫ নম্বর ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের দিউপাড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া লাউয়ারী নদীতে দিউপাড়া গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে প্রভাবশালী বাবুল এর ভাই মতিউর রহমান অবৈধভাবে বাঁশ-কাঠ দিয়ে শক্তিশালী বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে। অবৈধ বাঁধের কারণে নদীটিতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। নদীতে আটকে দেওয়া বাঁধের পাশে নদীর পাড়ে খুপরি ঘরও বানিয়েছেন প্রভাবশালীরা। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি জায়গায় নেট দিয়েও আটকে দেওয়া রয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে সদ্য খনন কৃত লাউয়ারী নদীতে পানি প্রবাহ ও নৌ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী দিউপাড়া গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে প্রভাবশালী বাবুল এর ভাই মতিউর রহমান ও সদর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর বাজারের পশ্চিম পাশে কৃষ্টপুর গ্রামের মৃত আকবর আলির ছেলে সেকান্দার আলী ও তার ছেলেরা। বিধান অনুসারে, প্রবহমান কোনো জলাশয়ে কোনো ধরনের বাঁধ, স্থায়ী অবকাঠামো বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। জলাশয়ে পানির প্রবাহ ও মাছের চলাচল বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করলে শাস্তির বিধান থাকলেও এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাউয়ারী নদীর দুই পাড়কে সংযুক্ত করে বাঁশ ও জালের বাঁধ দিয়ে নদীতে পানির গতিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণের নৌ চলাচল বন্ধ করে জাল দিয়ে মাছ আহরণ করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন নদীপথে কৃষিপণ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে, অন্যদিকে জাল ব্যবহার করায় মাছের প্রজনন ধ্বংস হচ্ছে। স্থানীয় রমজান আলীর ছেলে সাইদুল আলী জানান, প্রতি বছর এভাবে তারা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করেন। প্রভাবশালীরা এভাবে নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে অন্য কেউ নদীতে নামতে পারে না। কোনো নৌকাও চলাচল করতে দেয় না বাঁধ মালিকরা। স্থানীয় অনেকই লাউয়ারী নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ আহরণ করার কারণে ক্ষোভ জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, এই নদীতে যারা বাঁধ দিয়েছেন, তারা খুবই প্রভাশালী। তাই তাদের কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। নদীর পানির গতিপ্রবাহ ও নৌ চলাচল বন্ধ করে বাঁধ দেওয়া সঠিক কিনা জানতে চাইলে  স্থানীয় সেকান্দার আলী জানান, নদীতে বাঁশ ও পাটির বাঁধ দিয়ে প্রতিবছর এভাবেই মাছ আহরণ করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রেজোয়ানোর রহমান রনির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের ঘটনাটি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম, খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।
নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের বিষয়ে জানতে উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ বদিউজ্জামান এর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, লাউয়াড়ী নদীতে বাঁশ ও পাটির মাধ্যমে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি শুনেছেন। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ খবিরুল আহসান জানান, এ বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না। মৎস্য কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত