ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম

আমেরিকাকে ৪ দেশের বার্তা, কী করবেন নেতানিয়াহু-বাইডেন?

  আরবান ডেস্ক

প্রকাশ :  ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৪ দুপুর

ইসরায়েলে যে কোনো মুহূর্তে হামলা করতে পারে ইরান। এ আশঙ্কায় ইসরায়েল ও তাদের মিত্ররা জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর ছড়িয়েছে, ইসরায়েল আক্রান্ত হলে উপসাগরীয় দেশগুলোর ঘাঁটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু এতে আপত্তি এসেছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উপসাগরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটি ইরানে হামলায় ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলো আহ্বান জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের সীমানা ব্যবহার না করে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে কয়েক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর ইরানের নেতারা। তবে ইরান যেন ইসরায়েলে হামলা না করে এ জন্য বারবার সতর্ক করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য কূটনৈতিক ও সামরিক তৎপরতাও চালাচ্ছে দেশটি।

উপসাগরে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র দশকের পর দশক ধরে বিনিয়োগ করছে। এসব ঘাঁটি ইরানের খুব কাছে হওয়ায় এগুলো থেকে সবচেয়ে সহজে ইরানে হামলা চালাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।

উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েত তেল উপদ্বীপজুড়ে কয়েক হাজার হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করার যে চুক্তি, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

তারা বলছে, ইরানে হামলার জন্য তাদের আকাশসীমা দিয়ে মার্কিন বিমান উড্ডয়ন প্রতিরোধ করার পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৪০ হাজার সৈন্য রয়েছে। এদের বেশির ভাগ রয়েছে তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশগুলোতে। বিভিন্ন কৌশলগত বিমান এবং নৌঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

এর মধ্যে সৌদি আরবের প্রিন্স সুলতান এয়ারবেজে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭৬তম এয়ার এক্সপেডিশনারি উইং রয়েছে। এখান থেকে এফ-১৬ এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

এ ছাড়া কাতারে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের আঞ্চলিক সদর দপ্তর। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছে যুক্তরাষ্ট্রের এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া আরও অনেক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত উপস্থিতি রয়েছে। তাই উপসাগরীয় এলাকায় যে কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র খুব সহজে নিতে পারে।

এদিকে উপসাগরীয় দেশগুলোর এ আপত্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গোটা মধ্যপ্রাচ্য যেন যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে দেশটিকে নতুন কৌশল খুঁজতে হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইসরাইলকে সরাসরি সামরিক সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে ইসরায়েলও দুশ্চিন্তায় রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যুদ্ধ কৌশল পরিবর্তনও করতে পারেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

তবে এরপরও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বারবার সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নেতানিয়াহুর পক্ষেই থাকবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইরানের হুঁশিয়ারিও রয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব দেশগুলোর মাধ্যমে ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেয় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের তিন কর্মকর্তা বিষয়টি এক্সিওসকে জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ইরান মনে করে দামেস্কের কনস্যুলেটে যে হামলা হয়েছে সেটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ফলে এসব হামলার সঙ্গে আর যুক্ত না হতে তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।

 

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত