যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব কঠিন হচ্ছে

আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫, ১১:০৪ দুপুর

যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের আগমন নিয়ন্ত্রণে নতুন নীতমালা প্রণয়ন করেছে দেশটির সরকার। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, নিজেদের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চান তিনি।
এই লক্ষ্যে সোমবার (১২ মে) “ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপার পলিসি” নামে নীতিমালা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
নতুন এই নীতিমালায় অভিবাসীদের যু্ক্তরাজ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার বিধান পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে তাদের ভাষাগত দক্ষতা, দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
লেবার পার্টির নেতা প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, “গবেষণামূলকভাবে সীমান্ত খোলা রাখার” বিষয়টি তিনি বন্ধ করতে চান।
এমন কার্যক্রমের ফলে যুক্তরাজ্যে কনজারভেটিভ সরকারের আমলে নিট মাইগ্রেশন প্রায় এক মিলিয়ন বেড়েছে বলে দাবি লেবার পার্টির গঠিত সরকারের।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই নীতিমালার ফলে পুনরায় সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনি প্রতিশ্রতির অংশ হিসেবে দেশের নিট মাইগ্রেশন ব্যপকভাবে কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলো লেবার পার্টি। এরই অংশ হিসেবে এই নীতিমালা ঘোষণা করেছে সরকার।
নতুন নীতিমালায় যা থাকছে
সরকারের নীতিমালায় নাগরিকত্ব পাওয়ার বিধান কঠিন করা হয়েছে৷ এতে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন কারার আগে প্রার্থীকে ১০ বছর দেশটিতে অবস্থান করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আগের নিয়মে এটি ছিল পাঁচ বছর।
ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। প্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল ব্যক্তিদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের বেলায়ও সরকারের কঠোর হবে বলে নীতিমালায় ইঙ্গিত মিলেছে। জানা গেছে, পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে অবস্থান করার মেয়াদ কমিয়ে আনা হবে।
অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অভিবাসীদেরকে প্রত্যাবাসনের জন্য সরকারকে নতুন করে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারের মতে, অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর পদ্ধতিটি খুব দুর্বল। তিনি বলেন, “আমাদের আরো শক্তিশালী পদ্ধতি প্রয়োজন।”
বিদেশি দক্ষ কর্মীদের দেশটিতে কাজের সুযোগ পেতে ন্যূনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকার বিধানের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। এছাড়া এবছর কম দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ৫০ হাজারে নামিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।
অভিবাসন বিষয়ে এমন কঠোর অবস্থান দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে- ব্যবসায়ীদের এমন সতর্কতাকেও আমলে নেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এই বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, অধিক সংখ্যক অভিবাসীর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় এমন তত্ত্বের কোনো প্রমাণ নেই।
ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিকদের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোনো ভুল করা যাবে না, এই পরিকল্পনার মানে হলো অভিবাসীর সংখ্যা কমে আসবে। এটিই প্রতিজ্ঞা।”
তিনি আরও বলেন, “যদি আরও পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার হয়, আমার কথা খেয়াল করুন, আমরা পদক্ষেপ নেব।”