কেশবপুরে ভূ-গর্ভস্থ থেকে মৎস্য ঘেরে পানি উত্তোলন

আ.শ.ম. এহসানুল হোসেন তাইফুর
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ১২:২৪ দুপুর

কেশবপুরে মৎস্য ঘেরে ভূ-গর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলন কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। ভূ-গর্ভস্থের পাশাপাশি অনেকে নদ-নদী থেকে সেচ দিয়ে ঘেরে পানি ভরে নিচ্ছে। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে এবারও বন্যাসহ ও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। তবে মৎস্য অফিস কর্তৃপক্ষ বলছেন ভবদহ এলাকায় মৎস্য ঘের স্থাপন নীতিমালা অনুসরণ না করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি ছোট-বড় মৎস্য ঘের রয়েছে। গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুরে বন্যার পাশাপাশি ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতৃবৃন্দের অভিযোগ ঘের মালিকরা ভূ-গর্ভস্থ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির ভয়াবহ রূপ নেবে।
সরেজমিন উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের আলতাপোল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ঘের মালিকরা আগে ভাগেই ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরে নিচ্চে। এ ভাবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় পানি উত্তোলন করা হলে গত বারের মতো এবারও মানুষের বাড়ি ঘরে পানি উঠে আসবে। গত বছর বর্ষা মৌসুমে ঘের উপচে পানি মানুষের বাড়ি ঘরে উঠে আসে। প্লাবিত হয় ১০৪টি গ্রাম। মৎস্য ঘেরসহ ফসলে প্রায় ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এলাকার ভূক্তভোগী মানুষের দাবী ভূ-গর্ভস্থ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে এখনই আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলা উদ্দীন বলেন, গত বছর বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদনদীর উপচে পড়া পানিতে তাঁর ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এবার আগে ভাগেই ঘের মালিকদের বলা হয়েছে মৎস্য ঘের স্থাপন নীতিমালা অনুসরণ করেই ঘের করার জন্য।
২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহবায়ক বাবর আলী গোলদার বলেন, কেশবপুরে অপরিকল্পিত ভাবে মৎস্য ঘের তৈরি হওয়ায় বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে এলাকা জলাবদ্ধতা হয়ে পড়ে। ঘের মালিকরা ভূ-গর্ভস্থ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করলে গত বারের মত এবারও এলাকায় বন্যা দেখা দেবে। গত বছর এলাকায় প্রায় ৬ মাস জলাবদ্ধতা স্থায়ী হয়ে ছিল। ভূ-গর্ভস্থ থেকে ঘের মালিকরা অতিরিক্ত পানি উঠালেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সূদীপ বিশ্বাস বলেন, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি ছোট-বড় মৎস্য ঘের রয়েছে। এ ছাড়া পুকুর রয়েছে ৬ হাজার ৬৪০টি। ঘের মালিকদের ভবদহ এলাকায় মৎস্য ঘের স্থাপন নীতিমালা অনুসরণ করে ঘের স্থাপন করতে বলা হয়েছে। ঘের মালিকরা সর্বোচ্চ দেড় ফুট পানি ঘেরের মধ্যে উত্তোলন করতে পারবে। এর থেকে অতিরিক্ত পানি কেউ উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।