রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

তীব্র দাবদাহে জর্জরিত শান্তিগঞ্জ, শ্রমজীবী মানুষ বিপাকে


  শহীদুল ইসলাম রেদুয়ান, শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ :  ১৪ জুন ২০২৫, ১২:০৪ দুপুর

গত কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার লক্ষাধিক জন সাধারণের। দিনের বেলায় রাস্তাঘাট ফাঁকা, মাঠে-ঘাটে শ্রমিক সংখ্যা কম, স্কুল-কলেজে উপস্থিতিও আশানুরূপ নয়। শুক্রবার শান্তিগঞ্জে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের অন্যতম।
 
স্থানীয়দের ভাষ্য, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৪টা পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদে ঘরের বাইরে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ ও দিনমজুরেরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে রোদের মধ্যে কাজ করছেন, আবার অনেকেই শরীরের অবস্থা সহ্য করতে না পেরে কাজে অনুপস্থিত রয়েছেন।
 
শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন "এই তাপদাহে হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন ও ত্বকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। শিশু, বৃদ্ধ এবং রোগীদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান ও সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলতে হবে এবং বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নিতে হবে। 
 
শান্তিগঞ্জের পাগলা বাজারে শ্রমিজীবী গৌতম দাস বলেন,“এই রোদের মধ্যে কাজ করতে গিয়া মাথা ঘুরায়”রোদ থাকুক বা বৃষ্টি, কাজ করতেই হয়। কিন্তু এই ক’দিনের গরমে শরীর চলতেছে না। মাথা ঘুরায়, ঘাম থামেই না। কখন যে মাটিতে পড়ি, তা নিজেই বুঝি না। তাও তো থামলে হবে না, কাজ না করলে সংসার চলবে কীভাবে?
 
আরেক দিনমজুর আনহার বলেন,“ঘরে ছোট ছোট বাচ্চা, স্ত্রী অসুস্থ। ভোরবেলা মাঠে যাই, দুপুরে গরমে চোখ ঝাঁপসা লাগে। দুই গামছা ভিজায় ফেলি। আবার পানি পাই না—কখনো পানির কল শুকনা থাকে।”
 
ঈদের ছুটি থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান্নোয়ানের জন্য পাঠদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। অনেক অভিভাবক শিশুদের তীব্র গরমে স্কুলে পাঠাতে অনিচ্ছুক। উপজেলার মনিং বার্ড কিন্ডারগার্টেন এক শিক্ষক জানান, "অন্তত ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী গরমের কারণে নিয়মিত অনুপস্থিত।"
 
তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা, কিন্তু দিনে ৩-৪ ঘণ্টার লোডশেডিং জনভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে। পাশাপাশি অনেক গ্রামে টিউবওয়েলের পানি শুকিয়ে আসছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, "গরমে জনদুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা স্বাস্থ্যসেবা ত্বরান্বিত করেছি এবং স্কুলে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছি যেন শ্রেণিকক্ষে সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়।"
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত