শেরপুরে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ অভিযানে টাস্কফোর্স কমিটির সাথে সেনাবাহিনী
রফিক মজিদ, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০২ বিকাল
নিত্যপণের দাম নিয়ন্ত্রণে শেরপুরে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির সাথে এবার বাজার অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনী।
৬ নবেম্বর বুধবার দুপুরে শহরের স্টেডিয়াম মার্কেটের পাইকারি আড়ত এবং নয়আনী বাজারের পাইকারিী ও খুচরা বাজাে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এসময় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পাইকারী ও খুচরা বিক্রয়ের মুল্য তালিকা , ক্যাশ মেমো, মুনাফার পরিমাণ প্রভৃতি তদারক করা হয় এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। ব্যবসায়ীরা কেউ যেন অযৌক্তিক মুনাফা করে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াতে না পারে সেগুলো মনিটরিং করা হয়।
পাইকারি ও খুচরা এই দুই বাজারের মধ্যে দামের কিছুটা তারতম্য থাকলেও তা সন্তোষজনক দেখা যায় বলে টাস্কফোস টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম জানিয়েছে। তিনি জানান, অভিযানকালে ক্রয়মূল্য ভাউচার প্রদর্শন না করার অভিযোগে শহরের নয়ানী বাজারে ইদ্রিস আলী নামে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ীকে কৃষি বিপনন আইন-২০১৮ এর ১৯ (১) এর ক্র.নং (ঞ) বিধান অনুসারে ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। নিজের ভুল স্বীকার করে তাৎক্ষনিক ওই জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে ভবিষ্যতে আর এ ধরণের ভুল হবে না মর্মে ওই ব্যবসায়ী অঙ্গীকার করেন।
অভিযানকালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাজী আশিক বাহার। ক্যাপ্টেন নাহিয়ান-এর নেতৃত্বে সোনবাহিনীর একটি টিম ভ্রাম্যমান আদালত ও বাজার মনিটরিংকাজে সহায়তা কনে। এসময় বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বাজার মনিটরিং-এর আগে শেরপুর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে স্থাপিত সেনাক্যাম্পে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে গঠিত জেলা বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির সাথে এক মতবিনিময় সভা করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তারা। ১৩ বীরের অধিনায়ক লে. কর্ণেল হাসান হাফিজুল হক-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. রাজীব উল-আহসান, সদস্যসচিব জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম, সদস্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হাসান, জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক, ক্যাব সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক হাকিম বাবুল, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন, ছাত্র প্রতিনিধি মামুনুর রহমান, মনিবুল ইসলাম, সেনাক্যাম্পের মেজর তাওসিফ বিন হাসান, ক্যাপ্টেন নাহিয়ান এবং ডিজিএফআই কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নিত্যপণের বাজারমুল্য নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদক ও ক্রেতা-বিক্রেতা হয়ে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছতে মধ্যস্বত্বভোগী ও মুনাফাকারীদের এবং ইজারাদারদের যে দৌরাত্ম রয়েছে সেটার কারণে দামের ব্যাপক তারতম্য ঘটে থাকে। এজন্য সরাসরি উৎপাদক থেকে ভোক্তার হাতে দ্রব্যসামগ্রী পৌছাতে ওপেন কৃষি মার্কেটের মতো কিছু করা যায় কী না সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
শেরপুরে ক্ষুদ্র পরিসরে জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় সদর বাদে ৪ উপজেলায় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের প্রবেশ গেটের সামনে এ ধরনের কিছু বিক্রয়কেন্দ্র চালু করেছেন এবং এতে ভোক্তারা উপকৃত হচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি অবৈধ মজুতদার, মুনাফাখোর, মধ্যস্বত্বভোগী, বাজার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক যারা, তাদের অনুসন্ধান করে অভিযান পরিচালনা করার কথা আলোচনা করা হয়।