ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
শিরোনাম

পূর্বধলায় মেঘশিমুল-ভিকুনীয়া রাস্তা পাকাকরনে ১০ মিটার বাকী থাকায় জন দুর্ভোগ


  মো: জায়েজুল ইসলাম

প্রকাশ :  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৬ দুপুর

নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমুল নতুন বাজার থেকে হোগলা ইউনিয়নের ভিকুনিয়া পর্যন্ত নির্মিত পাকা সড়কে প্রায় ১০ মিটার রাস্তা দীর্ঘদিন যাবত অসম্পুর্ন অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রায় ৪ কোটি ৪লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সড়কটিতে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারছেনা এলাকাবাসী। এতে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে এলাকাবাসীসহ এই সড়কে চলাচলকারী জনসাধারনের মাঝে।

পূর্বধলা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে ঘাগড়া-পূর্বধলা রাস্তার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমুল নতুন বাজার থেকে হোগলা ইউনিয়নের ভিকুনীয়া পর্যন্ত ৩.১২৮ কি: মি: রাস্তা পাকা করণ করা হয়। হাওর অঞ্চলের বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে নির্মান কাজের জন্য অসীম সিংহ নামে এক ঠিকাদার কাজের দায়িত্ব পান। পরে তার কাছ থেকে নিয়ে নেত্রকোনার ঠিকাদার ইকবাল হোসেন রাস্তার কিছু অংশ বাকী রেখে কাজটি সম্পন্ন করেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। মেঘশিমুল নতুন বাজার থেকে একটু ভিতরের অংশে রাস্তার দুই পাশের মালিকগন জমি দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করায় ৬৫ মিটার রাস্তা বাকী রেখেই কাজ শেষ করতে বাধ্য হন ঠিকাদার।

এতে দুর্ভোগ কমেনি এলাকাবাসী ও এই রাস্তায় চলাচলকারী লোকজনদের। একটু বৃষ্টি হলেই, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল বা ভ্যানগাড়ি বা অন্যান্য যানবাহন নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। অসম্পুর্ন অংশে রাস্তার জমি দিতে অস্বীকারকারীদের মাঝে রাস্তার এক পাশে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আইন উদ্দিন ও অপর পাশে রয়েছেন আলী আমজাদ, তার ভাই মাসুদ। পরবর্তীতে স্থানীয়দের দাবী দাওয়া ও সালিশী দরবারের মাধ্যমে রাস্তার জমি দিতে অস্বীকারকারীদের একটি পক্ষের মাঝে আলী আমজাদ, মাসুদ ঘর সরিয়ে রাস্তার জমি দিতে রাজী হন। পরবর্তীতে এলাকার দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এই অসম্পুর্ন ৬৫ মিটার রাস্তা সম্পুর্ন করতে এডিপি থেকে পুনরায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজের কার্যাদেশ পায় মনি মন্ডল নামে এক ঠিকাদার। কাজ বাস্তবায়ন করেন হোগলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আকন্দ খোকন। পুন: নির্মাণে ৬৫ মিটারের মধ্যে ৫৫ মিটারের মত কাজ করতে পারলেও বাকী ১০ মিটারে কাজ করতে আবারও বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দা আইন উদ্দিন। আইন উদ্দিনের পূত্র মো: শামীম দাবী করেন ওই রাস্তার পুরোটাই তার জমির উপর দিয়ে দিতে হয় । তাই তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এতে এলকাবাসীর দুভোর্গ থেকেই যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ মিয়া জানান, রাস্তাটি পাকা করন করা হলেও একটু জায়গা বাকী থাকায় এলাকার মানুষের উপকারে আসছে না। একটু বৃষ্টি হলেই পানি কাঁদায় একাকার হয়ে হয়ে যায়। ফলে যানবাহন নিয়ে অনেকদুর ঘুরে যেতে হয়। তিনি অসম্পুর্ন রাস্তাটি দ্রুত কঠোর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানান। এই রাস্তায় নিয়মিত চলাচলকারী হোগলা ইউনিয়নের জামিরাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা, ঘাগড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: ফারুক হোসেন ফকির জানান, একটু রাস্তা পাকা করন না হওয়ায় অনেকদুর ঘুরে পূর্বধলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়।

হোগলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আকন্দ খোকন জানান, এই রাস্তা দিয়ে হোগলা-ঘাগড়া দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ পূর্বধলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় আসা যাওয়া করে। তাদের চলাচলের সুবিধার্তে রাস্তাটি পাকা করনের আওতায় আনা হয়। কিন্তু একটু বাকী থাকায় এলাকাবাসীর উপকারে আসছেনা রাস্তাটি। দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করে রাস্তাটি সম্পুর্ণ করার চেষ্টা হবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা প্রকৌশলী সাদিকুল জাহান রিদান জানান, স্থানীয় জমির মালিকদের বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর কারনে কাজটি সম্পন্ন হয়নি। তাই প্রথমে ৬৫ মিটার কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। পরবর্তীতে উপজেলা এডিপি থেকে বাস্তাবায়নের উদ্যোগ নিলেও স্থানীয়দের পুন: বাঁধার কারনে ১০মিটার কাজ আজও সম্পন্ন করা যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত