কলমাকান্দায় বন্যার পানির স্রোতে মাটি সরে হুমকির মুখে বিদ্যালয়, দেবে গেছে ফ্লোর
ফখরুল আলম খসরু, কলমাকান্দা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৫ দুপুর
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বন্যার পানিতে গজারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচের মাটি সরে গিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে বিদ্যালয়টি। তাছাড়া একটি শ্রেণিকক্ষের ফ্লোর দেবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানির প্রবল স্রোতে বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তাটি ভেঙে বড় একটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ওই স্থানে বাঁশের একটি সাঁকু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।
উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের গজারমারী গ্রামে ১৯৯৮ সালে গজারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে চার জন শিক্ষক ও ১২৬জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ভারীবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে গত ১ জুলাই কলমাকান্দার প্রধান উব্দাখালী নদীসহ উপজেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এতে করে পানি বেড়ে প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। বেশকিছু গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। ১৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় অর্ধশত বিদ্যালয়ের মাঠে ও বারান্দায় পানি ঢুকে। ওই সময়ে গজারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তাটি পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে গিয়ে বড় একটি গর্তের সৃষ্টি হয়। পরে পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়টির নিচের মাটি সরে গিয়ে একটি শ্রেণিকক্ষের ফ্লোর দেবে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল কুদ্দুস বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান, এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী মো. মমিনুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন, খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যালয়টি পরিদর্শণ করেছেন। এসময় পানি সরে গেলে দ্রুত বিদ্যালয়টি মেরামত করা হবে বলে আশ^স্ত করেন তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদিয়া আফসানা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের একটি মাত্র বিল্ডিং। এতে চারটি রুম রয়েছে। তারমধ্যে একটি অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর তিনটি কক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করা হয়। বন্যার পানিতে একটি শ্রেণিকক্ষের নিচের মাটি সরে গিয়ে ফ্লোর ভেঙে গেছে। বর্তমানে দুইটি কক্ষে কোন রকমে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, তার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়। বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে যায়। এসময় পানির স্রোতে বিদ্যালয়ের পাশের সড়কটি ভেঙে বড় একটি গর্তের সৃষ্টি হয়। এসময় বিদ্যালয়টির নিচের মাটি সরে গিয়ে বিদ্যালয়টির ব্যাপক ক্ষতি হয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, উপজেলার প্রায় অর্ধশত বিদ্যালয়ের বারান্দা ও মাঠে পানি উঠেছিল। এখন অবশ্য কোন বিদ্যালয়ের বারান্দায় পানি নেই। তবে কিছু বিদ্যালয়ের মাঠে এখনো পানি রয়েছে। আজ (রোববার) গাজারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উপজেলার চেয়ারম্যান ও ইউএনও মহোদয়কে নিয়ে পরিদর্শন করেছি। উনারা আশ^স্ত করেছেন পানি সরে গেলে বিদ্যালয়টি মেরামত করে দেবেন। কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, ঢলের পানিতে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল। এখন পানি অনেকটাই নেমে গেছে। এই পানিতে বেশকিছু রাস্তা-ঘাটসহ বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তারমধ্যে গাজারমারী স্কুলটি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত বিদ্যালয়টি মেরামত করা হবে।