শেরপুরের বিশিষ্ট লেখক-গবেষক ড. সুধাময় দাস-এর ৮৪ তম জন্মদিন উদযাপন
রফিক মজিদ, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩ দুপুর

শেরপুরের বিশিষ্ট লেখক-গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক ড. সুধাময় দাস এর ৮৪ তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে ৩ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় শহরের নিউমার্কেটস্থ উদিচি শিল্পীগোষ্ঠী কার্যালয়ে উদীচী এবং প্রগতি লেখক সংঘ এর যথা আয়োজনে অনাড়ম্বর জন্মদিন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় লেখকের জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা, স্মৃতিচারণ, সংগীত আবৃত্তি এবং কবিতা পাঠের আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন প্রগতি লেখক সংঘের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট প্রবীন সাংবাদিক এডভোকেট আব্দুর রহিম বাদল এবং সঞ্চালনায় ছিলেন উদিচি’র সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ নিয়োগী।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই তাঁর জীবন দর্শন এবং তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ শেরপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রহিম বাদল, উদীচীর সাবেক সভাপতি কমল চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি মোঃ এরশাদ আলী, শেরপুর জেলা মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি লুৎফুন্নাহার বেগম, শেরপুর জেলা প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক কবি রবিন পারভেজ, সমাজ কর্মী ও সংগঠক আবুল কালাম আজাদ, অধিকার কর্মী সোলায়মান আহম্মেদ, লেখক গবেষক জ্যোতি পোদ্দার, কবি হাদিউল ইসলাম এবং হাসান রাকিব প্রমুখ।
এরপর স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন কবি সুধাময় দাস, কমল চক্রবর্তী, রবিন পারভেজ, হাদিউল ইসলাম, জ্যোতি পোদ্দার, শুভজিত নিয়োগী, অশেষ সেনগুপ্ত, হাসান রাকিব, মনিকা শকুন্তলা প্রমুখ।
এছাড়া আবৃত্তিতে অংশ নেন বিনম্র দাম বৃত্ত এবং সুদিপ্তা দত্ত শ্রেষ্ঠা এবং সংগীত পরিবেশন করেন বিনম্র দাম বৃত্ত। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ড. সুধাময় দাস জন্মদিনের কেক কাটেন এবং তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য ড. সুধাময় দাস একাধারে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট লেখক, সংগঠক, গবেষক, একইসাথে নানা গুনে গুনান্বিত গুণিজন। জন্ম জামালপুর জেলার সদর থানার ফতেপুর গ্রামে বঙ্গীয় ১৫ কার্তিক ১৩৪৯ (৩১ অক্টোবর ১৯৪২) সনে। দিনটি ছিলো শনিবার। পিতা হোমিও চিকিৎসক ডাঃ ক্ষিতীশ চন্দ্র দাস ও মাতা ঊষারাণী দাসের জ্যেষ্ঠ সন্তান তিনি। জীবনের নানান চড়াই উৎরাই যেমন অতিক্রম করেছেন তেমনি বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। প্রতিনিয়তই সমৃদ্ধ করেছেন নিজেকে। জড়িয়েছেন খেলাধুলা, রাজনীতি, লেখালেখি, মুক্তিযুদ্ধ সহ নানা তৎপরতায়। পেশা হিসেবে বেছে নেন শিক্ষকতাকেই। প্রথম জীবনে হাইস্কুলের শিক্ষক হিসেবে শুরু -পরে সরকারী কলেজ শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ পথ পরিক্রমা শেষে বর্তমানেও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন হিসেবে শিক্ষকতাতেই রয়েছেন।
১৯৯৫ সালে ড. আহমদ শরীফের ভূমিকা সম্বলিত তাঁর প্রথম গ্রন্থ 'বাংলা উপন্যাসে চিত্রিত জীবন ও সমাজ' প্রকাশিত হয়। এ ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত মৌলিক ও সম্পাদিত গ্রন্থ মিলিয়ে প্রায় ২০ টির মতো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ড.সুধাময় দাস রচিত সর্বশেষ গ্রন্থ 'বহে যায় বেলা' যা মূলত জীবন অভিজ্ঞতা মূলক গ্রন্থ, প্রকাশিত হয়েছে ২০২৩ এর বইমেলায়। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে "ঋকে ঋকে ঋকবেদ" - আশা করা যায় মাসখানেকের মধ্যে বইটি পৌঁছে যাবে পাঠকের হাতে।
লেখালেখি ছাড়াও তিনি মুক্তাগাছা উপজেলা পাঠাগার, সাংস্কৃতিক সংগঠন শিল্প-শিল্পী, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী মুক্তাগাছা উপজেলা সংসদ, জাগৃতি সংঘ প্রভৃতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ- শেরপুর জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বর্তমানেও দ্বিতীয় বারের মতো সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমান শেরপুর জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি পদ ছাড়াও তিনি বিপ্লবী রবি নিয়োগী স্মৃতি পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব সহ নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সক্রিয় ভাবে যুক্ত রয়েছেন।

_medium_1762679038.jpg)
_medium_1762699613.jpg)



_medium_1762609411.jpg)
