আরবান ডেস্কঃ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে চান বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার অনুরোধ, বেইজিং যেন রাশিয়ার ওপর তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে সহযোগিতা করে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে (এসসিএমপি) দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার এটি প্রকাশিত হয়। খবর আলজাজিরার।
জেলেনস্কি জানান, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তিনি চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তা এখনো সম্ভব হয়নি।
হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটিকে জুমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি সরাসরি কথা বলতে চাই। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আমার একবার কথা হয়েছে তাও এক বছর আগে। ২৪ ফেব্রুয়ারি বৃহৎ পরিসরে আগ্রাসন শুরুর পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। যদিও আমি বিশ্বাস করি এটি সহায়ক হবে।
রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীন এখনো ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের নিন্দা জানায়নি। এ আগ্রাসনকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করে আসছেন। এ অভিযানে তার লক্ষ্য হলো— ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্ত করা ও নিরস্ত্রীকরণ।
ছয় মাসে পা দেওয়া এ লড়াইয়ে ইউক্রেনের অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় এক কোটির বেশি মানুষ। লড়াইয়ের কারণে দীর্ঘদিন দেশটি থেকে কোনো শস্য বিদেশে রপ্তানি হয়নি। যদিও একটি চুক্তি হওয়ার পর স্বল্প পরিসরে শস্য রপ্তানি শুরু হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, আমি বুঝতে পারছি চীন এ যুদ্ধ নিয়ে একটি ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ’ অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে। তবে ইউক্রেনের সার্বভৌম ভূখণ্ডে রাশিয়ার বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসনের মাধ্যমে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছে।
‘রাশিয়ানরা আগ্রাসনকারী। আমাদের ভূমিতে তারা আগ্রাসন চালাতে এসেছে। চীন একটি বড় ও শক্তিশালী দেশ। আমি অবশ্যই চাই, রাশিয়ান ফেডারেশনের বিষয়ে চীন তার মনোভাব পর্যালোচনা করুক’, যোগ করেন তিনি।
এ যুদ্ধের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তৎপর হওয়ার জন্য চীনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও চীন এখনো রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেয়নি।
জেলেনস্কি বলেন, আমি মনে করি, এ যুদ্ধের অবসানে পুতিনকে চাপ দেওয়ার মতো অর্থনৈতিক প্রভাব চীনের রয়েছে।
চীন রাশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। যুদ্ধ শুরুর হওয়ার পর থেকে দেশটি রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বাড়িয়েছে। এ পদক্ষেপ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে বেইজিংয়ের যে ক্ষতি তা পুষিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমি নিশ্চিত চীনের বাজার ছাড়া রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করবে। চীন যা করতে পারে তা হলো— যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করতে পারে।