সুহাদা মেহজাবিন : শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন নতুন কারিকুলাম ২০২৩ বাস্তবায়নে শিক্ষকদের পাঁচদিনের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে প্রশিক্ষণ উইং, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকার আয়োজনে এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের বাস্তবায়নে পূর্বধলা জগৎমনি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে উপজেলার উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ ৫৫টি বিদ্যালয় থেকে ৪৮১ জন শিক্ষক ১১টি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। এই প্রশিক্ষণ চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) প্রশিক্ষণ ভেন্যু ও প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন। এসময় সাথে ছিলেন, পূর্বধলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ আরিফুজ্জামান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি পূর্বধলা উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আগিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান মিন্টু, জগৎমনি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিকী, হোগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রশিদ সরকার, মৌদাম সেসিপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

প্রশিক্ষণের প্রথম দিনে প্রশিক্ষণ ভেন্যু পরিদর্শন ও প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন মাউশি’র ট্রেনিং বিভাগের উপপরিচালক ড. মোনালিসা খান।
এছাড়াও পরিদর্শন করেছেন জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল গফুর।
আজ শুক্রবার জগৎমনি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সরেজমিনে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, ২০২৩ সাল থেকে শুরু হয়েছে নতুন কারিকুলামে পাঠদান। নতুন কারিকুলামের আওতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চলছে। এরই অংশ হিসেবে পূর্বধলা উপজেলায় এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে সরকারের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে তারা ইতিবাচকভাবে দেখছেন বলে জানান।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর ৩জন করে মোট ৩৩ জন প্রশিক্ষক এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। পূর্বধলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো : রুহুল আলম তালুকদার এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছেন।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের পাঠদান আনন্দদায়ক ও চাপ কমাতে পাঠ্যবইয়ের কারিকুলামে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হবে এ শিক্ষাক্রম।

এরপর ২০২৪ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি এই শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালে যুক্ত হবে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণি যুক্ত হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে বই ও পরীক্ষা পদ্ধতি বদলে যাবে। শিখন কৌশলেও আসবে নানা পরিবর্তন। অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে এই শিক্ষাক্রম

বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধর স্বপ্ন বাস্তবায়নে চেষ্টা করছে। সেই লক্ষ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের জন্য সরকার চাইছে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে। সে লক্ষ্যেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ বাস্তবায়নে রূপরেখা দেয়া হয়েছে।